ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হলো হজ্জ। এটি এমন ইবাদত যেখানে আর্থিক ও শারীরিক উভয়েই অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এটি বিশ্ব মুসলমানদের মহামিলনের মাধ্যম। প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানদের হজ্জ পালন করা অপরিহার্য কর্তব্য।
হজ্জ আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ হলো – ইচ্ছে করা, ঘোরাফেরা করা, সংকল্প করা, পর্যবেক্ষণ করা ইত্যাদি।
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কোরআন ও হাদিসের নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে কাবা শরিফ এবং নির্দিষ্ট স্থানসমূহে তাওয়াফ ও জিয়ারত করাকে হজ্জ বলে।
ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায়, “ইসলামের মহান একটি রুকন আদায় করার নিমিত্তে সম্মান প্রদর্শনের জন্য পবিত্র কাবাঘর প্রদক্ষিণ করার সংকল্প করা।”
আল্লামা আবুল হাসান বলেছেন, “হজ্জ হচ্ছে কাবাঘরের সম্মানার্থে নির্দিষ্ট কার্যাবলি সহ এর জিয়ারতের সংকল্প করা।”
হজ্জের ফরজ
হজ্জের ফরজ ৩টি। এগুলো হলো–
- ইহরাম বাঁধা
- ওকুফে আরাফা অর্থাৎ, ৯ জিলহজ্জের দ্বিপ্রহরের পর হতে অর্থাৎ, সূর্য ঢলার পর হতে ১০ জিলহজ্ব সুবহে সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত যেকোনো সময় আরাফার ময়দানে উপস্থিত থাকা।
- তাওয়াফে যিয়ারত করা। অর্থাৎ, ১০,১১ ও ১২ জিলহজ্জ তারিখের মাঝে কাবা শরীফ তাওয়াফ করা।
হজ্জের ওয়াজিব
হজ্জের ওয়াজিব পাঁচটি। নিচে তা দেওয়া হলো:
১. আরাফান ময়দান হতে প্রত্যাবর্তনের সময় মুযদালিফায় অবস্থান করা।
২. সাফা ও মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের মাঝখানে দৌড়ানো বা সাঈ করা।
৩. শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করা।
৪. তাওয়াফে বিদা অর্থাৎ মক্কার বাইরে থেকে আগত হাজিদের জন্য বিদায়কালীন তাওয়াফ করা।
৫. মাথা মুড়ানো বা চুল ছাঁটা।
বিদায় হজ্জ
হযরত মুহাম্মদ (স.) দশম হিজরিতে লক্ষাধিক সাহাবি নিয়ে যে হজ্জ পালন করেন তা বিদায় হজ্জ নামে পরিচিত।
সূরা আন-নাসর নাজিল হওয়ার পর মহানবি (স.) বুঝতে পারলেন যে, তার জীবন প্রায় শেষ। তাই তিনি ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে ২৬ ফেব্রুয়ারি লক্ষাধিক সাহাবিকে সাথে নিয়ে হজ্জ করতে মক্কা অভিমুখে রওয়ানা দেন। একে বিদায় হজ্জ বলে।