পেশি কাকে বলে? পেশির বৈশিষ্ট্য ও কাজ কী?

পেশি কাকে বলে? (What is called Muscle in Bengali/Bangla?)

মেসোডার্ম থেকে উৎপন্ন যে টিস্যু সংকোচন-প্রসারণক্ষম ও অসংখ্য তন্তুর সমন্বয়ে গঠিত তাকে পেশি (Muscle) বলে।

 

পেশির প্রকারভেদ (Types of Muscle)

গঠন, অবস্থান ও কাজের তারতম্যের ভিত্তিতে পেশিকে তিন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথাঃ– ১। মসৃণ বা অনৈচ্ছিক; ২। হৃৎপেশি এবং ৩। রৈখিক বা ঐচ্ছিক।

১। মসৃণ (ভিসেরাল) বা অনৈচ্ছিক পেশি (Non-striated or Involuntary muscle)

এ পেশির কোষগুলো মাকু আকৃতির, ১৫-২০০μm পর্যন্ত দীর্ঘ। কোষের চওড়া অংশের ব্যাস ৮-১০ μm। প্রত্যেক কোষে নিউক্লিয়াসের সংখ্যা একটি এবং এটি কোষের চওড়া অংশে অবস্থান করে। কোষের আবরণী বা সারকোলেমা অস্পষ্ট। কোষের সাইটোপ্লাজম বা সারকোপ্লাজম-এ অসংখ্য অতি সূক্ষ্ম মায়োফাইব্রিল পেশিতন্তুর দৈর্ঘ্য বরাবর বিস্তৃত। মায়োফাইব্রিলে কোনো আড়াআড়ি রেখা দেখা যায় না। পৌষ্টিকনালি, রক্তনালি, শ্বাসনালি, মূত্রথলি, জরায়ু প্রভৃতি অঙ্গের প্রাচীরে এ পেশি পাওয়া যায়। মসৃণ পেশিগুলো আন্তরযন্ত্রীয় অঙ্গের প্রাচীরে থাকে বলে এগুলোকে ভিসেরাল পেশিও বলে।

 

পেশির সাধারণ বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Muscle)

মায়োব্লাস্ট নামক আদিকোষ রূপান্তরিত হয়ে তন্তুর মতো লম্বা পেশিকোষ সৃষ্টি করে। তাই পেশিকোষকে পেশিতন্তু বলে৷ প্রতিটি কোষ সুস্পষ্ট নিউক্লিয়াসযুক্ত এবং সারকোলেমা নামক ঝিল্লিতে আবৃত। এর ভেতরের সাইটোপ্লাজমকে সারকোপ্লাজম বলে। সারকোপ্লাজমের মধ্যে পরস্পর সমান্তরালভাবে অবস্থিত অসংখ্য মায়োফাইব্রিল নামক সূক্ষ্ম তন্তু থাকে। গুচ্ছবদ্ধ অ্যাকটিন ও মায়োসিন নামক প্রোটিন ফিলামেন্ট দিয়ে মায়োফাইব্রিল গঠিত। পেশিটিস্যু প্রায় ৭৫ শতাংশ পানি ও অবশিষ্টাংশ কঠিন পদার্থে গঠিত।

 

পেশির কাজ (Functions of Muscle)

পেশির কাজগুলো নিচে দেওয়া হলো–

  • দেহের আকৃতি দান করে ও অস্থি সঞ্চালনে সহায়তা করা।
  • দেহের নির্দিষ্ট আকার গঠন করা।
  • নড়াচড়া ও চলাচলে সাহায্য করা।
  • শক্তির সংরক্ষণ করা।
  • দেহের ভেতরের অঙ্গগুলোকে রক্ষা করা।
  • হৃদপেশি দেহে রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করা।