গ্যাসের গতীয় তত্ত্ব কি? (What are The Kinetic Theory of Gases?)

গ্যাসের অণুগুলো এলোমেলোভাবে ছুটাছুটি করে। এ ছুটাছুটি তথা গতিশীলতার কারণে পদার্থের গ্যাসীয় অবস্থায় কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্যের উৎপন্ন হয়। এসব বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করার জন্য Gassendi, Newton, Bernoulli, Clausius এবং Maxwell প্রভৃতি বিজ্ঞানীদের গবেষণার ফলে একটি তত্ত্ব উপস্থাপিত হয় যা গ্যাসের গতীয় তত্ত্ব নামে পরিচিত। গতীয়তত্ত্ব কতগুলো স্বীকার্য নিয়ে গঠিত।

 

গতিতত্ত্বের স্বীকার্যসমূহ (Postulates of Kinetic theory)

১. গ্যাসের গঠনঃ সকল গ্যাস অসংখ্য ক্ষুদ্র, গোলাকার ও স্থিতিস্থাপক কণা দিয়ে গঠিত। এসব কণাকে অণু বলে। তবে নিস্ক্রিয় গ্যাসের ক্ষেত্রে এসব কণা পরমাণু। একটি গ্যাসের প্রতিটি অণুর আকার ও ভর একই।

২. অণুর গতিশীলতাঃ গ্যাসের অণুগুলো অবিরামভাবে চারিদিকে ছুটাছুটি করে। এ ছুটাছুটির সময় অণুগুলো একে অপরের সাথে এবং পাত্রের গায়ে সংঘর্ষ করে। যে কোন দুটো সংঘর্ষের মধ্যবর্তী পথ সরল রৈখিক।

৩. গড় মুক্ত পথঃ দুটো সংঘর্ষের মধ্যবর্তী দূরত্বসমূহের গড়মানকে গ্যাস অণুর গড়মুক্ত পথ বলে।

৪. সংঘর্ষের সময়ঃ অণুগুলোর মধ্যে শুধু সংঘর্ষের জন্য যে সময় ব্যয় হয় তা দুটো সংঘর্ষের মধ্যবর্তী সময়ের তুলনায় নগণ্য।

৫. গতিবেগঃ গ্যাস অণুগুলো সম্পূর্ণ স্থিতিস্থাপক হওয়ায় সংঘর্ষের ফলে তাদের গতিবেগের কোন পরিবর্তন হয় না।

৬. চাপঃ গ্যাসের অণুগুলো পাত্রের গায়ে যে সংঘর্ষ করে তার ফলেই গ্যাসের চাপ সৃষ্টি হয়। ধাক্কার ফলে পাত্রের গায়ে একক ক্ষেত্রের উপর যে বল প্রযুক্ত হয় তাকেই গ্যাসের চাপ বলে।

৭. আয়তনঃ গ্যাস অণুগুলো এতই ছোট যে অণুগুলোর মোট প্রকৃত (নিজস্ব) আয়তন গ্যাসের পাত্রের আয়তন তথা গ্যাসের মোট আয়তনের তুলনায় খুবই নগণ্য।

৮. আকর্ষণ/বিকর্ষণঃ গ্যাসের অণুগুলো একে অপর থেকে এত দূরে দূরে অবস্থান করে যে, এদের পরস্পরের প্রতি কোন আকর্ষণ বা বিকর্ষণ নেই বলেই ধরা হয়।

৯. গতিশক্তিঃ গ্যাসের গতিশক্তি পরম তাপমাত্রার সমানুপাতিক।

১০. অভিকর্ষ শক্তির প্রভাবঃ গ্যাসের অণুগুলোর গতির উপর অভিকর্ষ শক্তির কোন প্রভাব নেই।