যকৃত হচ্ছে মানবদেহের সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থি, যা মধ্যচ্ছদার নিচের উদর গহ্বরের উপরে পাকস্থলির ডান পাশে অবস্থিত। এটি মানবদেহের রসায়ন গবেষণাগার নামে পরিচিত। যকৃতের অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কোষ স্নেহ জাতীয় খাদ্য পরিপাকে সহায়তাকারী পিত্তরস তৈরি করে।
যকৃতের কাজ
যকৃতের কাজগুলো নিচে দেওয়া হলো:
- অতিরিক্ত গ্লুকোজকে গ্লাইকোজেন হিসেবে জমা রাখে।
- অতিরিক্ত গ্লুকোজকে চর্বিতে পরিণত করে সঞ্চয় করে রাখে।
- পিত্তরস তৈরি করে পিত্তথলিতে জমা রাখে।
- প্লাজমা প্রােটিন তৈরি করে।
- কোলেস্টেরল উৎপন্ন করে।
- স্নেহ জাতীয় পদার্থ শোষণে সাহায্য করে।
- রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
- পিত্তরস খাদ্যের অম্লভাব প্রশমিত করে ও ক্ষারীয় পরিবেশ সৃষ্টি করে।
যকৃতের রোগ
যকৃতের ওজনের পাঁচ থেকে দশ ভাগের বেশি চর্বি দিয়ে পূরণ হলে যে রোগটি হয় তাকে ফ্যাটি লিভার বলে। পশ্চিমা বিশ্বে সাধারণত মদ্যপানের কারণে ফ্যাটি লিভার হয়ে থাকে। তবে বহুমূত্র, শর্করা জাতীয় খাদ্যের আধিক্য,রক্তে চর্বির আধিক্য, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা ইত্যাদি কারণে ফ্যাটি লিভার হয়। লিভারে জমা চর্বি অনেক সময় স্থানীয় প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং এ প্রদাহ থেকে কিছুসংখ্যক রোগীর লিভার সিরোসিস, এমনকী কোনো কোনো ক্ষেত্রে লিভার ক্যান্সারও হতে পারে। প্রাথমিক অবস্থায় এই রোগের কোনো উপসর্গ থাকে না, অন্য রোগের পরীক্ষা করার সময় সাধারণত রোগটি ধরা পড়ে। কখনো কখনো পেটের উপরিভাগের ডানদিকে ব্যথা,অবসন্নতা, ক্ষুধামান্দ্য ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে।