বিশেষ্য পদ কাকে বলে? বিশেষ্য পদ কত প্রকার ও কি কি?

বিশেষ্য বাংলা ব্যাকরণের একটি পদ। যে পদ দিয়ে কোনো ব্যক্তি, বস্তু, জাতি, স্থান, সমষ্টি, কাজ বা গুণের নাম বোঝায় তাকে বিশেষ্য পদ বলে। কোনো কিছুর নামকে বিশেষ্য পদ বলে। একে নামপদও বলা হয়। যেমন : রবীন্দ্রনাথ, পানি, মানুষ, ঢাকা, সমিতি, ভোজন, বিনয় ইত্যাদি।

 

বিশেষ্য পদের সংজ্ঞা

সাধারণভাবে এর সংজ্ঞা হিসাবে বলা হয়, কোন কিছুর নামকেই বিশেষ্য বলে। বাংলা ব্যাকরণ মতে, বাক্যে ব্যবহৃত যে প্রকার পদ (শব্দ-ধ্বনি) দ্বারা কোন কিছুর নাম বোঝানো হয় তাকেই বিশেষ্য পদ বলে। যেমনঃ মাহবুবা, সাকিব, নারায়ণগঞ্জ, তিতাস ইত্যাদি।

যা গুণ প্রকাশ করে না, যা অন্য পদের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয় না, যা কোনো কাজ করাকে প্রকাশ করে না এবং নিজে অপরির্তিত থেকে অন্য পদকে সমন্বিত করে না−তাই বিশেষ্য পদ।

 

বিশেষ্য পদ কত প্রকার ও কি কি?

সাধারণত বিশেষ্য পদ ছয় রকমের হয়। যেমন :–

১. সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য,

২. জাতিবাচক বিশেষ্য,

৩.বস্তুবাচক বিশেষ্য,

৪. গুণবাচক বিশেষ্য,

৫. সমষ্টিবাচক বিশেষ্য ও

৬.ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য।

১। সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য : যে বিশেষ্য পদ দিয়ে ব্যক্তি, স্থান, নদী, পর্বত, সাগর, গ্রন্থ ইত্যাদির নাম বা সংজ্ঞা বোঝায়, তাকে সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, ঢাকা, দিল্লি, পদ্মা, মেঘনা, হিমালয়, বঙ্গোপসাগর, মহাভারত, মেঘনাদবধ ইত্যাদি।

২। জাতিবাচক বিশেষ্য : যে বিশেষ্য পদ দিয়ে কোনো জাতি বা শ্রেণির নাম বোঝায়, তাকে জাতিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন, মানুষ, মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, ইংরেজ, আমেরিকান, বাঙালি, নিগ্রো, পশু, পাখি, ইত্যাদি।

৩। বস্তুবাচক বিশেষ্য : যে বিশেষ্য পদ দিয়ে কোনো বস্তুর নাম বোঝায়, তাকে বস্তুবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন, পানি, লবণ, তেল, জল, ইট, কাঠ, সোনা, রুপা, তামা, লোহা, কাগজ, কলম ইত্যাদি।

৪। গুণবাচক বিশেষ্য : যে বিশেষ্য পদ দিয়ে কোনো গুণ, দোষ বা অবস্থা বোঝায়, তাকে গুণবাচক বিশেষ্য পদ বলে। যেমন, দুঃখ, দয়া, সুখ, সৌন্দর্য, সাধুতা, বিনয়, বীরত্ব, শোক ইত্যাদি।

৫। সমষ্টিবাচক বিশেষ্য : যে বিশেষ্য পদ দিয়ে কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর সমষ্টি বোঝায়, তাকে সমষ্টিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন, জনতা, সভা, সমিতি, দল, ফৌজ, নৌবহর, মাহফিল ইত্যাদি।

৬। ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য : যে বিশেষ্য পদ দিয়ে কোনো কাজের নাম বোঝায়, তাকে ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন, গমন, ভোজন, দর্শন, ভ্রমণ, রোদন, শয়ন, শ্রবণ, ইত্যাদি। একে ভাববাচক বিশেষ্যও বলা হয়।