এক বা একাধিক বিভক্তিযুক্ত পদের দ্বারা যখন বক্তার মনোভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পায়, তখন তাকে বাক্য বলে। অথবা যে সুবিন্যস্ত পদসমষ্টি দ্বারা কোনো বিষয়ে বক্তার মনোভাব সম্পূর্ণরুপে প্রকাশিত হয়, তাকে বাক্য বলে।
বাক্যের অংশ কয়টি ও কী কী?
একটি বাক্যের দুটি অংশ থাকে। যেমন–
ক. উদ্দেশ্য
খ. বিধেয়
ক. উদ্দেশ্য : বাক্যে যার সম্পর্কে কিছু বলা হয়, তাকে উদ্দেশ্য বলে। যেমন- মিনা গান গায়। এখানে মিনা সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, গান গায়। সুতরাং মিনা উদ্দেশ্য।
খ. বিধেয় : বাক্যে উদ্দেশ্য সম্পর্কে যা কিছু বলা হয়, তাকে বিধেয় বলে। যেমন- মিনা গান গায়। এখানে ‘গান গায়’ এ অংশটি বিধেয়।
গঠনের দিক থেকে বাক্য কয় প্রকার?
গঠনের দিক থেকে বাক্য তিন প্রকার। যথা : ১. সরল বাক্য, ২. জটিল বা মিশ্র বাক্য ও ৩. যৌগিক বাক্য।
১। সরল বাক্যঃ যে বাক্যে একটি মাত্র কর্তা (উদ্দেশ্য) এবং একটি মাত্র সমাপিকা ক্রিয়া (বিধেয়) থাকে, তাকে সরল বাক্য বলে। যেমন- ছেলেরা ফুটবল খেলছে।
২। জটিল বাক্যঃ যে বাক্যে একটি প্রধান বাক্যাংশ এবং এক বা একাধিক অপ্রধান বাক্যাংশ থাকে, তাকে মিশ্র বা জটিল বাক্য বলে। যেমন- যে মানুষের সেবা করে, সেই শ্রেষ্ঠ মানুষ।
৩। যৌগিক বাক্যঃ দুই বা ততোধিক বাক্য যখন ও, এবং, আর, কিন্ত, সুতরাং, তথাপি ইত্যাদি অব্যয়ের সাহায্যে যুক্ত থাকে, তখন তাকে যৌগিক বাক্য বলে। যেমন : তার বয়স বেড়েছে, কিন্তু বুদ্ধি বাড়েনি; যেহেতু তুমি বেশি নম্বর পেয়েছো, সুতরাং তুমি প্রথম হবে।
বাক্য রূপান্তর কাকে বলে?
এক প্রকার বাক্যকে মূল অর্থের পরিবর্তন না ঘটিয়ে অন্য প্রকারের বাক্যে পরিণত করাকে বাক্যের পরিবর্তন বা বাক্য রূপান্তর বলে।
সরল বাক্য থেকে জটিল বাক্যে রূপান্তরের নিয়ম :
১। অর্থের কোনো পরিবর্তন হবে না।
২। সরল বাক্যের কর্তা ও সমাপিকা ক্রিয়ার না করে সাধারণ জটিল বাক্যের খণ্ডবাক্য গঠন করতে হবে।
৩। সরল বাক্যের অবশিষ্ট অংশকে অপ্রধান খণ্ডবাক্যে পরিণত করতে হবে।
৪। অপ্রধান খণ্ডবাক্যকে সাপেক্ষ সর্বনাম (যে-সে, যিনি-তিনি, যাহা-তাহা) কিংবা নিত্য সম্বন্ধীয় অব্যয় (যখন-তখন, যেমন-তেমন, যদি-তবে, যদিও-তথাপি, যত-তত) দ্বারা যুক্ত করতে হবে।