পারমাণবিক ভর হল দুটি ভরের অনুপাত। পারমাণবিক ভরকে অনেকসময় একীভূত পারমাণবিক ভর একক হিসেবেও প্রকাশ করা হয়। পদার্থের অণুর ক্ষেত্রও একই রকম সংজ্ঞা প্রদান করা যায়। তখন এটিকে আণবিক ভর নামে ডাকা হয়। কোন পদার্থের আণবিক ভর এর পরমাণুগুলোর পারমাণবিক ভর থেকে বের করা যায়। কোন পদার্থের একটি অনুতে অবস্থিত প্রতিটি পরমাণুর পারমাণবিক ভরকে ঐ অণুর রাসায়নিক সংকেতে নির্দেশিত পরমাণুগুলোর স্ব স্ব অনুপাত দ্বারা গুণ করে গুণফলগুলোকে যোগ করলে ঐ অণুর আণবিক ভর পাওয়া যায়।
পারমাণবিক ভর কাকে বলে?
কার্বন-১২ আইসোটোপ এর একটি পরমাণুর ভর কে ১২ একক ধরে অন্যান্য মৌলের আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর নির্ণয় করা হয়। কোন মৌলের একটি পরমাণুর ভর কার্বন 12 আইসোটোপের 1/12 অংশের তুলনায় যত গুণ ভারী,সেই সংখ্যাকে ওই মৌলের আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর (বা সংক্ষেপে পারমাণবিক ভর) বলা হয়।
পারমাণবিক ভরের একক
পারমাণবিক ভর একক (amu) : পরমাণুর ভর মাপার জন্য ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দের IUPAC সম্মেলনে যে একক ব্যবহার করার জন্য প্রস্তাব করা হয়,তা হচ্ছে পারমাণবিক ভর একক ( atomic mass unit সংক্ষেপে amu ) । [ amu = 1.6605 × 10-24g । একটি কার্বন -12 পরমাণুর ভরকে 12 amu একক ধরে এর হিসাব করা হয় । : পরমাণুর ভর = আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর × 1.6605 × 10-24g
রাসায়নিক গণনায় পারমাণবিক ভরের প্রয়োজনীয়তা নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
- পরমাণুর ভরসমূহের মাধ্যমে কোন যৌগের শতকরা সংযুতি নির্ণয় করা যায়।
- পরমাণুর ভর ব্যবহার করে আণবিক ভর নির্ণয় করা যায়।
- এর সাহায্যে কোন বস্তুর পরিমাণযোগ্য ধারণা লাভ করা যায়।
- পারমাণবিক ভর জানা থাকলে একটি পরমাণুর ভরের মাধ্যমে অপর পরমাণুর ভর নির্ণয় করা যায়।
- রসায়নের বিভিন্ন পরীক্ষামূলক কাজের জন্য পরমাণুর ভরের প্রয়োজন হয়।
- আধুনিক রসায়নে কোন মৌলের পরমাণুর ভর নির্ণয় করার জন্য কার্বন -12 আইসোটোপের পরমাণুর ভরকে প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
- পারমাণবিক ভর থেকে কতগুলো মৌলের বিভিন্ন ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়।
- পরমাণুর ঘনত্ব, গলনাঙ্ক, স্ফুটনাঙ্ক ইত্যাদি নির্ধারণ করা যায়।