যেসব রক্তনালির মাধ্যমে সাধারণত অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্ত হৃৎপিণ্ড থেকে সারাদেহে বাহিত হয় তাকে ধমনি বলে। ফুসফুসীয় ধমনি এর ব্যতিক্রম। এই ব্যতিক্রমধর্মী ধমনি হৃৎপিন্ড থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইডযুক্ত রক্ত ফুসফুসে পৌঁছে দেয়। ধমনির প্রাচীর তিন স্তরবিশিষ্ট:
- টিউনিকা এক্সটার্না (Tunica externa): ধমনির বাহিরের স্তরকে টিউনিকা এক্সটার্না বলে। এটি তন্তুময় যােজক কলা বা টিস্যু দিয়ে তৈরি।
- টিউনিকা মিডিয়া (Tunica media): ধমনির মাঝের স্তরকে টিউনিকা মিডিয়া বলে। এটি বৃত্তাকার অনৈচ্ছিক পেশি দিয়ে তৈরি।
- টিউনিকা ইন্টারনা (Tunica interna): ধমনির ভিতরের স্তরকে টিউনিকা ইন্টারনা বলে। এটি সরল আবরণী কলা দিয়ে তৈরি।
ধমনির প্রাচীর পুরু ও স্থিতিস্থাপক। ধমনিতে কপাটিকা থাকে না, এর নালিপথ সরু। হৃৎপিণ্ডের প্রত্যেক সংকোচনের ফলে দেহে ছােট-বড় সব ধমনিতে রক্ত তরঙ্গের মতাে প্রবাহিত হয়। এতে ধমনিগাত্র সংকুচিত বা প্রসারিত হয়। ধমনির এই স্ফীতি এবং সংকোচনকে নাড়িস্পন্দন বলে। ধমনির ভিতর রক্তপ্রবাহ, ধমনিগাত্রের সংকোচন, প্রসারণ এবং স্থিতিস্থাপকতা নাড়িস্পন্দনের প্রধান কারণ। হাতের কব্জির ধমনির উপর হাত রেখে নাড়িস্পন্দন অনুভব করা যায়।
“ধমনি শিরা থেকে ভিন্নতর”—ব্যাখ্যা করো।
ধমনি শিরা থেকে ভিন্নতর; কারণ শিরা দেহের বিভিন্ন অংশ থেকে রক্ত হৃৎপিণ্ডে নিয আসে, আর ধমনি হৃৎপিণ্ড থেকে রক্ত সারা দেহে নিয়ে যায়। পালমােনারী শিরা ব্যতীত সকল শিরা CO2 সমৃদ্ধ রক্ত বহন করে এবং পালমোনারী ধমনি ব্যতীত সকল ধমনি O2 যুক্ত রক্ত বহন করে। শিরায় নাড়ি স্পন্দন নেই, কিন্তু ধমনিতে নাড়ি স্পন্দন আছে। শিরার প্রাচীরের মধ্যস্তর অল্প পেশিযুক্ত ও পাতলা; ধমনির প্রাচীরের মধ্যস্তর পেশিবহুল ও পুরু।