গামা রশ্মি (gamma ray) এক ধরনের তাড়িতচৌম্বক তরঙ্গ এবং এ রশ্মি আধান নিরপেক্ষ। ফরাসি রসায়নবিদ ও পদার্থবিজ্ঞানী পল ভিলার্ড ১৯০০ সালে গামা রশ্মি আবিষ্কার করেন। একে γ দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
গামা রশ্মি নির্গমনে কী হয়?
গামা রশ্মি একটি তেজস্ক্রিয় রশ্মি। ভারী এবং অস্থিত তেজস্ক্রিয় মৌল গামা রশ্মি নির্গত করে থাকে। এটি নির্গমনের সাথে কোনো প্রোটন, নিউট্রন বা ইলেকট্রনের সংখ্যার হ্রাস-বৃদ্ধি বা রূপান্তর ঘটে না।
গামা রশ্মির ধর্ম
(১) গামা রশ্মি অতি ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যের বিদ্যুৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ।
(২) গামা রশ্মির কোনো ভর নেই।
(৩) গামা রশ্মির কোনো চার্জ নেই।
(৪) গামা রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য দৃশ্যমান আলোকের তরঙ্গদৈর্ঘ্যের তুলনায় অনেক কম।
(৫) গামা রশ্মি ৩×১০৮ ms−1 বেগে গমন করে।
(৬) গামা রশ্মি বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র দ্বারা বিক্ষিপ্ত হয় না।
(৭) গামা রশ্মি চৌম্বক ক্ষেত্র দ্বারা বিক্ষিপ্ত হয় না।
(৮) গামা রশ্মি ফটোগ্রাফিক প্লেটে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
(৯) এরা কোনো পদার্থের উপর আপতিত হয়ে প্রতিপ্রভা সৃষ্টি করে।
(১০) গামা রশ্মির আয়নায়ন ক্ষমতা আছে। এই ক্ষমতা আলফা এবং বিটা রশ্মির তুলনায় অনেক কম।
(১১) গামা রশ্মির ভেদন ক্ষমতা আছে। আলফা এবং বিটা রশ্মির তুলনায় এই ভেদন ক্ষমতা অনেক বেশি।
(১২) এটা আলোকের মতো বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ বলে গামা রশ্মির প্রতিফলন, প্রতিসরণ, ব্যতিচার, অপবর্তন ইত্যাদি সব আলোকীয় ধর্ম আছে।
গামা রশ্মির ব্যবহার
মানব দেহে ক্যান্সার আক্রান্ত সেল ধ্বংস করতে বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ে, বিজ্ঞানগারে গবেষণার কাজে ও ধাতব বস্তুতে ফাটল নির্ণয়ে গামা রশ্মি ব্যবহৃত হয়।
গামা রশ্মির ক্ষতিকর দিক
গামা রশ্মির প্রভাবে মানুষের নিম্নলিখিত ক্ষতি হতে পারে–
১. এ রশ্মি দেহের কোষ নষ্ট করতে পারে;
২. এ রশ্মির প্রভাবে মাথার চুল পড়ে যায়;
৩. এ রশ্মিতে আক্রান্ত মানুষের ক্যান্সার ও টিউমার হতে পারে; এবং
৪. অতিমাত্রায় এ রশ্মি মানুষের দেহে পড়লে মানুষের মৃত্যু হতে পারে।